প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) যশোর জেলা স্টেডিয়ামে এক জনসভায় বক্তৃতা দেবেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ এই জনসভার আয়োজন করেছে। প্রধানমন্ত্রীর এই জনসভা উপলক্ষে যশোর এখন একটি উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে।
জেলার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সর্বস্তরের জনগণের মাঝে উৎসাহ ও উদ্দীপনা বিরাজ করছে। খবর:
বুধবার (২২ নভেম্বর) আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, দলের সভাপতি শেখ হাসিনার এই জনসভাকে কেন্দ্র করে শুধুমাত্র যশোরের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাই নয়, বরং গোটা দক্ষিণাঞ্চলের জনগণের মাঝে উৎসাহ ও উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
যশোর স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দিন যশোর ও এর আশপাশের জেলাগুলোর কোনও মানুষ বাড়িতে বসে থাকবে না। তারা সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তৃতা শুনতে জনসভায় আসবেন। এই অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ শেখ হাসিনার জনসভায় অংশ নিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন।’
তিনি বলেন, ‘এক সময়ে সন্ত্রাসবাদের জনপদ যশোর- আওয়ামী লীগের শাসন আমলে এখন উন্নয়নের জনপদে পরিণত হয়েছে। আর তাই কাল এই জনসভাকে কেন্দ্র করে যশোর জনসমুদ্রে পরিণত হবে।’
নানক বলেন, ‘বস্তুতপক্ষে, আগামীকালের এই জনসভায় যশোর বিএনপি-জামায়াত অপশক্তির পাশাপাশি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠবে। কারণ, তারা এখনও সক্রিয় আছে।’
আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জনসভা প্রস্তুতির চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছেন এবং তারা প্রধানমন্ত্রীর এই জনসভাকে সামনে রেখে ব্যাপক মাইকিং ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। করোনার কারণে প্রধানমন্ত্রী প্রায় তিন বছর পর এই প্রথম ঢাকার বাইরে কোনও জনসভায় অংশ নিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর পোস্টার ও ব্যানানের পাশাপাশি রঙিন খিলান ও তোরণ দিয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক সজ্জিত করা হয়েছে। নেতারা প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানকে স্বাগত জানাতে দাড়াটানা মোড়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রোড, গারিবশাহ্ রোড ও অন্যান্য এলাকা ব্যানার, বেলুন, ফেস্টুন ও পোস্টার দিয়ে সজ্জিত করেছে।
আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক দলীয় ফোরাম মিটিংয়ে এখন থেকে দলকে আরও বেশি সময় দেওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন জেলা সফর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। আর এর অংশ হিসেবে প্রথম জনসভাটি যশোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তারা বলেন, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ২৬ ডিসেম্বর এখানে এক জনসভায় বক্তৃতা করেন। ৫০ বছর পর তাঁর বড় মেয়ে শেখ হাসিনা একই স্থানে জনসভায় বক্তৃতা দেবেন।
জনসভার মঞ্চটি নৌকার আদলে নির্মাণ করা হয়েছে। পাঁচ বছর আগে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর যশোর ঈদগাহ মাঠে শেখ হাসিনা নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেন।
যশোরে এই জনসভার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রধানের দেশব্যাপী প্রচারাভিযান শুরু হবে। এরপর তিনি ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পলো গ্রাউন্ডে এবং ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারের শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দলীয় সভাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে জনসভায় ভাষন দেবেন। এসব জনসভায় দলীয় সভাপতি তার ভাষণে জনগণের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদেরও নতুন বার্তা দেবেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এএফএম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, ‘যশোরে শেখ হাসিনার জনসমাবেশের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তাকে স্বাগত জানাতে এ অঞ্চলের সর্বস্তরের জনগণ প্রস্তুত রয়েছে। করোনার কারণে আওয়ামী লীগ প্রধান ২৭ মাস পর ঢাকার বাইরে কোনও জনসভায় অংশ নিচ্ছেন।’ তিনি বলেন, ‘জনসভায় বিএনপি-জামায়াতের জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধেও সবাইকে সতর্ক করা হবে। এছাড়া জনগণকে মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানানো হবে।’
যশোর জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, এই জনসভায় ১০ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটানোর লক্ষ্য তাদের রয়েছে। যশোরের বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের উপজেলাসহ খুলনা বিভাগের ১০টি জেলা থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এই জনসভায় যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এক দিনের সফরে কাল যশোর পৌঁছাবেন। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ বিমান বাহিনী অ্যাকাডেমির প্রেসিডেন্ট প্যারেডে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী বিএএফ অ্যাকাডেমিতে পাসিং আউট কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করবেন। বিকালে, আওয়ামী লীগ সভাপতি যশোর জেলা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর ও জনসভাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :